ইন্টিলিজেন্ট ডিজাইন : ‘আধুনিক সৃষ্টিবাদ’ এর জন্ম
আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট ১৯৮৭ সালে এক ঐতিহাসিক রায়ে ক্রিয়েশন সায়েন্সকে ‘বৈজ্ঞানিক নয় বরং ‘রিলিজিয়াস ডগমা হিসেবে চিহ্নিত করে দেওয়ার পর পরই সৃষ্টিবাদীরাও বুঝে গিয়েছিলেন যে এভাবে আর সচেতন জনসাধারণকে বােকা বানিয়ে রাখা যাবে না। তারা যখন দেখলাে যে বিজ্ঞানীমহল কিছুতেই তাদের অবৈজ্ঞানিক যুক্তিগুলােকে সমর্থন করছে না তখন তারা সত্যিকার অর্থেই মরিয়া হয়ে উঠল। গােপনে গােপনে জন্ম হল ‘আধুনিক সৃষ্টিবাদের। এই ‘আধুনিক সৃষ্টিবাদীরা তাদের পুর্বসুরীদের ভুল থেকে মূলতঃ তিনটি শিক্ষা নিলেন —
প্রথমতঃ তারা বুঝেছিলেন কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের বিশ্বাসকে (sectarian belief) বিজ্ঞান হিসেবে চালানাে যাবে না, বরং সার্বজনীন সৃষ্টিকর্তার পক্ষেই ‘সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করতে হবে।
দ্বিতীয়তঃ সৃষ্টিতত্ত্বের যে সমস্ত পুর্বর্তন দাবীগুলাে হাস্যকর শােনায় এবং বৈজ্ঞানিক মহলে এবং সচেতন জনগণের মধ্যে ইতােমধ্যেই পরিত্যক্ত হয়েছে (যেমন বাইবেল কথিত পৃথিবীর বয়স- ছ’হাজার বছর) সেগুলাে বাদ দিয়ে আধুনিক এবং বিশ্বাসযােগ্য যুক্তি হাজির করা।
তৃতীয়তঃ বিজ্ঞান যে কেবল ‘প্রাকৃতিক নিয়ম দিকে জগৎকে ব্যাখ্যা করে’ -এই মনােভাবকে ‘গোঁড়ামীপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে অপার্থিব অলৌকিক সত্ত্বাকে ধীরে ধীরে বিজ্ঞানের আওতায় নিয়ে আসা।
মােদ্দা কথা হল বিবর্তনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য তাদের মূলতঃ দু’টো নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হলাে: একদিকে তাদের প্রয়ােজন হয়ে পড়লাে আরেকটু ‘সফিসটিকেটেড’ তত্ত্বের আর অন্যদিকে অর্থ প্রতিপত্তি এবং রাজনৈতিক চালের জোড়ে সরকারী মাধ্যমগুলােতে আইডির পক্ষে সমর্থন জোগাড়। করা। অর্থাৎ, সােজা পথে যদি স্কুল কলেজে তাদের সৃষ্টিতত্ত্ব ঢােকানাে না যায় তাহলে বাঁকা পথে যাওয়া ছাড়া আর উপায় কি, বিশেষতঃ যখন ক্ষমতা এবং অর্থ কোনটারই তাদের অভাব নেই। আর তারই ফলাফল হচ্ছে আজকের এই সৃষ্টির ‘বুদ্ধিদীপ্ত অনুকল্প’ (Intelligent Design argument), বা সংক্ষেপে আইডি।
তত্ত্ব হিসেবে ‘ইন্টিলিজেন্ট ডিজাইন’ বা ‘বুদ্ধিদীপ্ত অনুকপ’কে সাধারণ মানুষের সামনে হাজির করা হয় বিগত নব্বই এর দশকে। মাইকেল বিহে, উইলিয়াম ডেম্বস্কি, ফিলিপ জনসন, জোনাথন ওয়েলস প্রমুখ এ তত্ত্বটির প্রবক্তা এবং প্রচারক। প্রবক্তাদের সকলেই মােটা অঙ্কের অর্থপুষ্ট রক্ষণশীল খ্রীষ্টান সংগঠন ডিস্কোভারি ইন্সটিটিউটের (Discovery Institute) সাথে যুক্ত। এঁদের যুক্তি হল, আমাদের বিশ্বব্রহ্মান্ড এবং সর্বোপরি জৈব জীবন এতই জটিল এবং অনন্যসাধারণ যে প্রাকৃতিক উপায়ে সেগুলাে উদ্ভুত হতে পারে না, এবং এর পেছনে এক বুদ্ধিদীপ্ত পরিকল্পনাকারীর পরিকল্পনার ছাপ আছে।
এই তত্ত্বের প্রবক্তারা মহাবিশ্ব এবং পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টির পিছনে ঈশ্বর জড়িত থাকবার ব্যাপারটা মুখ ফুটে সরাসরি না বললেও সেদিকেই প্রায়শঃ ইঙ্গিত করে বলেন, বৈজ্ঞানিক ডেটাগুলাে শুধু প্রাকৃতিক নিয়ম দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয় কিংবা উচিৎ ও নয়, এগুলােকে সঠিকভাবে বােঝা যাবে তখনই, যখন এক সৃজনশীল সজ্ঞাত সত্ত্বার (intelligent agent) সুস্পষ্ট উদ্দেশ্যের আলােকে এগুলােকে দেখার চেষ্টা এবং বিশ্লেষণ করা হবে।
প্রথমদিকে বৈজ্ঞানিক মহলে সুবিধা করতে না পারলেও বিজ্ঞান বিষয়ে অসচেতন রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিমন্ডলে এই আধুনিক সৃষ্টিবাদী’রা আক্ষরিক অর্থেই তর্ক-বিতর্কের টাইফুন ছুটিয়ে দিতে সমর্থ হয়। আর বরাবরের মত তাে আমেরিকান সরকার আর মৌলবাদী খ্রীষ্টান চার্চ পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ার জন্য তাে মুখিয়ে ছিলই। যেমন, ভিয়েনার রােমান ক্যাথলিক আর্চ বিশপ Christoph Schonborn ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ এর ৭ই জুলাই, ২০০৫ সংখ্যায় পরিস্কার ঘােষণা করেন যে। ক্যাথলিক চার্চ প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ঘটা বিবর্তনকে অস্বীকার করে। এর একমাস পরেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ একটি প্রেস কনফারেন্সে ঘােষণা করেন যে, তিনি স্কুল কলেজে বিবর্তন এবং ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন দুটোই পড়ানাের পক্ষে[২৭]।
তারা তাদের কৌশলের অংশ হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষ জনগণের কাছে গিয়ে দাবী করে যে এই ‘ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন তত্ত্বের সাথে আসলে ধর্মের কোনই সম্পর্ক নেই। এটি সম্পূর্ণ ভাবেই একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব। যেমন, ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনের অন্যতম প্রবক্তা এবং ডিস্কোভারি ইন্সটিটিউটের অন্যতম পুরােধা ব্যক্তিত্ব উইলিয়াম ডেম্বস্কি তার The Design Revolution’ (২০০৪) বইয়ে বলেন[২৮]:
‘সৃষ্টির বুদ্ধিদীপ্ত অনুকল্পটি কোন প্রােটেস্ট্যান্ট- খ্রীষ্টান সংক্রান্ত বিষয় না, এমনকি সাধারণ খ্রীষ্টিয় বিশ্বাসের ব্যাপারও নয় …. এটি এক অগ্রসর বৈজ্ঞানিক গবেষনামূলক কর্মসূচী। এ অনুকল্পের প্রবক্তারা এটার উৎকর্ষতা এবং ন্যায্যতা কোন ধরনের ধর্মীয় আবেদন হাজির না করেই বৈজ্ঞানিক মহলে উত্থাপন করতে সচেষ্ট।
সেই ডেম্বস্কিই আবার খ্রীষ্টানদের সভাসমিতিতে গিয়ে তাদের সাথে একাত্মতা ঘােষনা করে বলেন, তার লক্ষ্যই হচ্ছে যীশু খ্রীষ্টকে বিজ্ঞানের জগতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা। তিনি তার Intelligent Design: The Bridge Between Science and Theology (১৯৯৯) বইয়ে সুস্পষ্ট ভাবেই লিখেছিলেন[২৮]:
‘বিজ্ঞানের যে সমস্ত দৃষ্টিভঙ্গি যীশু খ্রীষ্টকে দৃশ্যপট থেকে বিতারিত করে দিয়েছে। সেগুলােকে মৌলিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে দেখতে হবে। যীশুকে বাদ দিয়ে কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উপর গভীর ধারণা লাভ করা যায় না।’
অর্থাৎ, আইডির প্রবক্তারা ঠিক করেছেন তারা সাধারণ মানুষের মধ্যে গিয়ে রথও দেখবেন আবার কলাও বেঁচবেন। জনগণের সেকুলার অংশকে হাত করার লক্ষ্যে তারা ক্রমাগত প্রচার চালান যে তাদের। তত্ত্ব বৈজ্ঞানিক, এর সাথে ধর্মের কোনই সম্পর্ক নেই, কিন্তু তাদের আসল গােমড় ফাঁস হয়ে যায় যখন। তারা রক্ষণশীল মৌলবাদী সংগঠনের লােকজনের সাথে মিশতে গিয়ে বিশ্বাসের ঝাপি উপুর করে দেন।
ডিস্কোভারি ইন্সটিউটের আরেক কর্ণধর জোনাথন ওয়েলস ‘Unification Church’ এর আজীবন সদস্য। তিনি ‘Moonie in-house journal এ ‘Darwinism : Why I went for a second PhD শিরােনামের একটি প্রবন্ধে পরিস্কার করেই বলেন তার জীবনের একমাত্র ব্রতই হচ্ছে ডারউইনিজম। ঠেকানাে। তিনি লিখেছেন[২৯]:
পিতার (চার্চের ফাদার Reverend Moon) উপদেশ, আমার শিক্ষা আর প্রার্থনা আমাকে এই মর্মে উদ্বুদ্ধ করেছে যে আমি আমার পুরাে জীবন ডারউইনিজম ধ্বংস করার কাজে নিয়ােজিত করব, ঠিক যেমনিভাবে Unification Church এর অনেক সদস্য মার্ক্সিজম ধ্বংস করার কাজে উৎসর্গ করেছেন। যখন পিতা ১৯৭৮ সালে পিএইচডি প্রােগ্রামের জন্য আমাকে (আরাে একডজন সেমিনারী গ্র্যাজুয়েট ছাত্রের সাথে) নির্বাচন করলেন, আমি সাথে সাথে এই সম্মুখ সমরে যােগদান করার সুযােগ লুফে নিলাম।
বিজ্ঞান পড়লেই যে মানুষ ‘বিজ্ঞানমনস্ক’ হয় না জোনাথন ওয়েলসের উপরােক্ত উক্তিতেও তা আবারাে প্রমাণিত হয়। অধ্যাপক রিচার্ড ডকিন্স এ প্রসঙ্গে বলেন,
‘This quotation alone casts doubt on any claims Wells might have had to be taken seriously as a disinterested seeker after truth-which would seem a fairly minimal qualification for PhD in science’.[৩০]
এই আধুনিক সৃষ্টিতাত্ত্বিকদের দুরভিসন্ধি জনসমক্ষে আরাে একবার প্রকাশিত হয়ে যায় যখন হঠাৎ করেই ডিস্কোভারি ইন্সটিটিউটের এক ‘গােপন দলিল’ ১৯৯৯ সালে ইন্টারনেটে ফাঁস হয়ে যায়। দলিলটি ‘ওয়েজ ডকুমেন্ট’ (Wedge Document) নামে কুখ্যাত। দলিলটি এখানে↑ রাখা আছে। দলিলটির ফাঁস হয়ে যাবার ব্যাপারটি এবং এর নির্ভরযােগ্যতা ডিস্কোভারি ইন্সটিটিউট নিজেই স্বীকার করেছিল[২৮]। দলিলটিতে লেখা আছে, “ইন্টিলিজেন্ট ডিজাইন’- এর পুরােধাদের প্রধানতম লক্ষ্যই হচ্ছে বৈজ্ঞানিক বস্তুবাদকে শিক্ষা, রাজনৈতিক এবং সামাজিক অঙ্গন থেকে হটিয়ে দিয়ে সব জায়গায়।
ভাববাদী দৃষ্টিভঙ্গীকে প্রতিষ্ঠিত করা আর যে প্রাকৃতিক এবং বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর মাধ্যমে বিজ্ঞানের সৌধ গড়ে উঠেছে তার মূলে কুঠারাঘাত করা। মজার ব্যাপারটা হচ্ছে, দলিলটিতে আরও বলা হয়েছে, তাদের মূল আক্রোশটা হচ্ছে বস্তুবাদের পুরােধা ডারউইন, মার্ক্স এবং ফ্রয়েডের উপর। তারা বিজ্ঞানের বিরােধীতা করতে যেয়ে এতই অন্ধ হয় গেছেন যে, ডারউইন, মার্ক্স এবং ফ্রয়েড সবার দর্শনকে একাকার করে ফেলেছেন, তাদের পার্থক্যগুলাে বােঝারও ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন।
সে যাই হােক, আজকে অনেক আগ্রসর ধার্মিক এবং সৃষ্টিবাদী ব্যক্তিই বিবর্তনকে মেনে নিয়েছেন এই বলে যে তাদের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের সাথে এর কোন দ্বন্দ্ব নেই। কিন্তু ফিলিপ জনসনসহ আইডি প্রবক্তারা এতটাই অন্ধ মৌলবাদী যে তাদের ধার্মিক বিবর্তনবাদীদের (যারা ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন, এবং বিবর্তনবাদকেও একটি বাস্তবতা হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছেন) প্রতিও বিন্দুমাত্র সহানুভূতি নেই[২৪]।
ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন প্রবক্তরা পূর্বতন সৃষ্টিতত্ত্বের সাথে তাদের পার্থক্য করতে চাইলেও প্রতিবারই তাদের প্রচেষ্টা মাঠে মারা গেছে। এমনকি ডােভার কোর্টের মামলায় এটিও প্রকাশিত হয়ে পড়ে যে, Of Pandas and People নামের যে বইটি তারা ডােভার স্কুলের পাঠ্য পুস্তক হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন সেটির মূল লেখক Dean Kenyon এর কিছুদিন আগেই What is Creation Science? নামে একটি বইয়ের ভুমিকা লিখেছিলেন। বইয়ের দ্বিতীয় লেখক Percival Davis আবার বাইবেলীয় ছয় হাজার বছরের ‘ইয়ং আর্থ’ সমর্থন করে একটি বই লিখেছিলেন যার নাম – A Case for Creationism।
তবে সবচেয়ে লজ্জাকর যে ব্যাপারটি প্রকাশিত হয়ে যায় তা হল, Of Pandas and People বইটি নিজেই একটি সৃষ্টিতাত্ত্বিক বই, যেটি ১৯৮৩ সালে ‘Creation Biology’ নামে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৮৬ সালে একই বই বেরােয় ‘Biology and Creation’ নামে। Of Pandas and People বইটি আসলে ‘Biology and Creation এরই হুবহু কপি শুধু ‘creation’ শব্দটি সরিয়ে দিয়ে ‘Intelligent design’ শব্দটি বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, আর Creator এর জায়গায় Designer বসানাে হয়েছে।
নিঃসন্দেহে সচেতন মহলের কাছে আইডি প্রবক্তাদের এহেন ‘লুকোচুরি খেলা’ একদমই গ্রহনযােগ্যতা পায় নি। ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন তত্ত্বের প্রবক্তারা তত্ত্বটিকে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে চালাতে চাইলেও বৈজ্ঞানিক মহলে এটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়েছে; শুধু তাই নয়, এটিকে ‘উত্তম মােড়কে সৃষ্টিবাদ’ (better packaged creationism), ‘সস্তা জ্যাকেটে সৃষ্টিবাদ’ (creationism in a cheap tuxedo), লুকানাে সৃষ্টিবাদ (stealth creationism) ইত্যাদি বিভিন্ন অভিধায় অভিষিক্ত করা হয়[৩১]।
আজকে আমেরিকাসহ সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা বিশেষ করে জীববিজ্ঞানীরা, বিজ্ঞানের এবং নিজেদের টিকে থাকার স্বার্থেই ব্যাপারটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছেন। বেশীর ভাগ জায়গায়ই আইডি সমর্থকদের পরাজয় ঘটলেও ছােট খাটো কিছু জায়গায় তারা দিব্যি ঢুকে পড়তে পেরেছে, ওহাইও এবং কানসাসের দু’টি ছােট স্কুল বাের্ড (যেখানে রক্ষনশীল রিপাবলিকান দলের সদস্য সংখ্যা বেশী) ইতােমধ্যেই তাদের জীববিজ্ঞানের পাঠ্যসুচীতে বিবর্তনবাদে সংশয় প্রকাশ করা উচিত বলে লাইন যােগ করে দিয়েছে। জর্জিয়ায় কব কাউন্টি স্কুল বাের্ড বিবর্তন একটি তত্ত্ব হলেও তা সত্য নয় বলে বইতে স্টিকার লাগিয়ে দেয়, পরে অবশ্য তারা তা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিলাে।
জীববিজ্ঞানী ডঃ টিম বেড়া তার (Evolution and the Myth of Creationsim: a basic guide to the facts in the Evolution Debate) বইয়ের ভূমিকাতে লিখেছেন যে এতদিন বিজ্ঞানীরা সৃষ্টিতত্ত্ববাদীদের এইসব কর্মকান্ডকে অবহেলা করে এসেছে, শুধু গবেষণার কাজ করাকেই কর্তব্য মনে করেছে। কিন্তু আজকে আমেরিকায় এরা এতই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে, এরা মানব সভ্যতার জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করেছে, বিজ্ঞানীদের জন্য আর চুপ করে বসে থাকা ঠিক হবে না। তাই আজকে আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের বড় বড় জীববিজ্ঞানীরা যেখানেই আইডি নিয়ে মামলা হচ্ছে সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন সাক্ষ্য দিতে, মিডিয়ার বক্তব্য রাখছেন, বিজ্ঞান বিশেষতঃ বিবর্তনবাদের প্রয়ােজনীয়তা নিয়ে বই লিখছেন, ইন্টারনেটে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটগুলােতে বিস্তারিত লিখছেন এবং বিভিন্নভাবে এ বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন।
বিবর্তনের পথ ধরে
২৭.↑ Dennett DC, 2006, The Hoax of Intelligent Design and How It was Prepared, from Intelligent Thought: Science versus the Intelligent Design Movement, Brockman J (Editor), Vintage.
২৮.↑ Coyne JA, 2006, The Faith That Dare NOT Speak Its Name, from Intelligent Thought: Science versus the Intelligent Design Movement, Brockman J (Editor), Vintage
৩০.↑ Dawkins R, 2006, Intelligent Aliens, from Intelligent Thought: Science versus the Intelligent Design Movement, Brockman J (Editor), Vintage, pp 92.
৩১.↑ Perakh M, 2005, Intelligent Design Theory – A Quasi-Scientific Endeavor with a Religious Agenda