কিন্তু যত আশাবাদীই হই কিংবা হওয়ার অভিনয় করি না কেন, সত্যি বলতে কী মানুষের বেঁচে থাকার ইতিহাস আসলে শেষ পর্যন্ত সহিংসতারই ইতিহাস। যে কোনো প্রাচীন ইতিহাস ভিত্তিক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোতে চোখ রাখলেই দেখা যায় এক রাজা আরেক রাজার সাথে যুদ্ধ করছে, কেউ ষড়যন্ত্র করছে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য, কেউবা পার্শ্ববর্তী রাজ্য আক্রমণের জন্য মুখিয়ে আছে, কখনো গ্ল্যাডিয়েটরদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে ক্ষুধার্ত সিংহের খাঁচায়, কখনো বা নরবলি দেয়া হয়েছে কিংবা কুমারী নারী উৎসর্গ করা হয়েছে রাজ্যের সমৃদ্ধি কামনায়।
আমরা ইতিহাসের সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে যত পেছনের দিকেই যাই না কেন, এ ধরনের যুদ্ধ এবং অমানবিক নৃশংসতার হাত থেকে আমরা নিস্তার পাই না। আমাদের আদিম পূর্বপুরুষেরা কেউ বা যুদ্ধ করেছে লাঠিসোটা দিয়ে, কেউ বা বল্লম দিয়ে, কেউ বা তীর ধনুক দিয়ে কিংবা কেউ বুমেরাং ব্যবহার করে। আদিম গুহাচিত্রগুলোতে চোখ রাখলেই দেখা যায় তীক্ষ্ণ সেসব অস্ত্র ব্যবহার করে তারা পশু শিকার করেছে, কখনো বা হানাহানি মারামারি করেছে নিজেদের মধ্যেই। তারপরেও আমাদের স্কুল কলেজের বইপত্রে শেখানো হয়েছে কিংবা জনপ্রিয় মিডিয়ায় বহুদিন ধরে বোঝানো হয়েছে আমরা নাকি খুব শান্তিপ্রিয় জীব।
আমরা পশুদের মতো নির্বিচারে হানাহানি মারামারি করি না। আসলে মানুষ খুব ‘শান্তিপ্রিয় প্রজাতি’ সমাজে গেড়ে বসা এই মিথটিকে স্টিভেন পিঙ্কার তার ব্ল্যাঙ্ক স্লেট চিহ্নিত করেছেন ‘মিথ অব নোবেল স্যাভেজ’ (Myth of Nobel Savage) হিসেবে। অবশ্য এই অযাচিত মিথটিকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে নৃতাত্ত্বিক এবং সমাজতাত্ত্বিকদের অবদানও ফেলে দেবার মতো নয়। তারা প্রথম থেকেই উৎসাহী ছিলেন আমাদের অন্ধকার জীবনের ইতিবৃত্তগুলো বেমালুম চেপে গিয়ে একধরনের আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি জনমানসে প্রোথিত করতে। সে সব ‘শান্তিকামী নৃতত্ত্ববিদেরা’ এক সময় সোৎসাহে বলে বেড়াতেন যে, ছোটখাটো যুদ্ধ টুদ্ধ হলেও মানবেতিহাসের পাতায় কোনো নরভক্ষণের (Canabalism) দৃষ্টান্ত নেই।
তারপর তারা নিজেরাই নিজেদের কথা গিলতে শুরু করলেন যখন সহিংসতা, হানাহানি, যুদ্ধ, হত্যা এবং এমনকি নরভক্ষণেরও গণ্ডায় গণ্ডায় আলামত বেরিয়ে আসতে শুরু করল। প্রাথমিক একটি দৃষ্টান্তের উল্লেখ পাওয়া যায় প্রায় আটশ হাজার বছর আগেকার পাওয়া ফসিলের আলামত থেকে। অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ ক্রিস্টি জি. টার্নার বহু পরিত্যক্ত মানব হাড়-গোড় বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তে আসেন যে, সেগুলো আসলে রান্না করে ভক্ষণ করা হয়েছিল, আর তা করেছিল সমসাময়িক মানুষেরাই। তাদের সে সময়কার থালা-বাসন এবং অন্যান্য রন্ধন সামগ্রীতেও মায়োগ্লোবিনের (পেশী প্রোটিন) নিদর্শন স্পষ্ট[১৯৬]।
এমনকি আমরা হোমোস্যাপিয়েন্সরা আজ থেকে ৫০,০০০ বছর আগে নিয়ান্ডার্থালদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম এবং সম্ভবত তাদের অবলুপ্তির কারণ ছিলাম আমরাই শান্তিপ্রিয় আধুনিক মানবদের পুর্বসূরীরা[১৯৭]। ইরাকের রাজধানী বাগদাদ থেকে ৪০০ কিলোমিটার উত্তরে শানিদার গুহায় পাওয়া বিভিন্ন আলামত আর রালফ সোলেকি[১৯৮] এবং স্টিভেন চার্চিলের গবেষণা থেকে জানা গেছে সম্ভবত আধুনিক হোমোস্যাপিয়েন্স মানুষের নিক্ষিপ্ত অস্ত্রশস্ত্রের আঘাতেই নিয়ান্ডার্থালদের মৃত্যু হয়।

শানিদার গুহায় পাওয়া নিয়ান্ডার্থালদের ফসিলের ক্ষতের সাথে আধুনিক মানুষের হাত থেকে নিক্ষিপ্ত হালকা বর্শার আঘাতের সামঞ্জস্য বিশেষভাবে লক্ষণীয়[১৯৯]। শুধু তাই নয়, গবেষক ফার্নান্ডো রেমিরেস রোসির গবেষণা থেকে জানা গেছে, কিছু জায়গায় যুদ্ধজয়ের পরে হোমো স্যাপিয়েন্সরা ঘটা করে নিয়ান্ডার্থালদের মাংস ভক্ষণ করে উৎসব পালন করত। অধ্যাপক রোসি স্পষ্ট করেই বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, আধুনিক মানুষেরা নিয়ান্ডার্থালদের খাদ্য হিসেবে ভক্ষণ করেছিল’[২০০]।

পুরুষালি সহিংসতা
আগের অধ্যায় থেকে আমরা জেনেছি পুরুষেরা মেয়েদের চেয়ে বেশি সহিংস, এবং তার কারণ আমাদের বৈজ্ঞানিকভাবেই বিবর্তনীয় পথ পরিক্রমার আলোকে খুঁজতে হবে। বিবর্তনীয় বিজ্ঞানীরা বলেন, পুরুষেরা এক সময় ছিল হান্টার বা শিকারি, আর মেয়েরা ফলমূল সংগ্রাহক। প্রয়োজনের তাগিদেই একটা সময় পুরুষদের একে অন্যের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হয়েছে; অন্য গোত্রের সাথে মারামারি হানাহানি করতে হয়েছে; নিজের সাম্রাজ্য বাড়াতে হয়েছে; অস্ত্র চালাতে হয়েছে। তাদেরকে কারিগরি বিষয়ে বেশি জড়িত হতে হয়েছে। আদিম সমাজে অস্ত্র চালনা, করা শিকারে পারদর্শী হওয়াকে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে বেঁচে থাকার অন্যতম নিয়ামক হিসেবে চিহ্নিত করা হতো। যারা এগুলোতে পারদর্শী হয়ে উঠেছে তারাই অধিক হারে সন্তান সন্ততি এ পৃথিবীতে রেখে যেতে পেরেছে, যারা এগুলো পারেনি তারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
পৃথিবীতে মানব সভ্যতার ইতিহাস ঘাটলে পাওয়া যাবে পুরুষেরা শুধু আত্মরক্ষা করতেই যুদ্ধ করেনি, যুদ্ধ করেছে সাম্রাজ্য বাড়াতে আর সম্পত্তি আর নারীর দখল নিতে। জন টুবি, লিডা কসমাইডস, রিচার্ড র্যাংহাম তাদের বেশ কিছু গবেষণায় দেখিয়েছেন, যে ট্রাইবাল সোসাইটিগুলোতে সহিংসতা শক্তিশালী পুরুষদের উপযোগিতা দিয়েছিল টিকে থাকতে, এবং তারা সেসময় যুদ্ধ করত নারীর দখল নিতে[২০১]। এমনকি এখনকার ট্রাইবাল সমাজগুলোতে এই মানসিকতার প্রভাব বিরল নয়। এর বাস্তব প্রমাণ বিজ্ঞানীরা পেয়ছেন ভেনিজুয়ালার আদিম ট্রাইব ইয়ানোমামো (Ya̧nomamö)-দের নিয়ে গবেষণা করে। নৃতত্ত্ববিদ নেপোলিয়ন চ্যাংনন এই ট্রাইব নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে খুব অবাক হয়েই লক্ষ করেন—
এরা শুধু সম্পদ আহরণের জন্য যুদ্ধ করে না, এরা যুদ্ধ করে নারীদের উপর অধিকার নিতেও।
দেখা গেল ট্রাইবে যতবেশি শক্তিশালী এবং সমর-দক্ষ পুরুষ পাওয়া যাচ্ছে, তত বেশি তারা নারীদের উপর অধিকার নিতে পেরেছে।
আসলে যতই অস্বীকার করা হোক না কেন, কিংবা শুনতে আমাদের জন্য যতই অস্বস্তি লাগুক না কেন, গবেষকরা ইতিহাসের পাতা পর্যালোচনা আর বিশ্লেষণ করে বলেন, বিশেষত প্রাক-কৃষিপূর্ব সমাজে সহিংসতা এবং আগ্রাসনের মাধ্যমে জোর করে একাধিক নারীদের উপর দখল নিয়ে পুরুষেরা নিজেদের জিন ভবিষ্যত প্রজন্মে ছড়িয়ে দিয়েছিল। ইতিহাসে চেঙ্গিস খানের (১১৬৭-১২২৭) মতো যুদ্ধবাজেরা একেকটি বড় উদাহরণ। চেঙ্গিস খান শুধু যুদ্ধই করতেন না, যে সাম্রাজ্যই দখল করতেন, সেখানকার নারীদের ভোগ করতেন উৎসাহের সাথে। তিনি বলতেন[২০২],
সর্বোত্তম আনন্দজনক ব্যাপার নিহিত রয়েছে শত্রুকে ধ্বংসের মধ্যে, তাদেরকে তাড়া করার মধ্যে আর তাদের যাবতীয় সম্পদ লুটপাটের মধ্যে, ধ্বংসের আর্তনাদে আক্রান্তদের আপনজনের চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি ঝরা অবলোকন করতে, তাদের অশ্বের দখল নিতে, আর তাদের স্ত্রী এবং কন্যাদের নগ্ন শরীরের উপর উপগত হতে।
পুরুষদের এই সনাতন আগ্রাসী মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায় আজকের সমাজে ঘটা যুদ্ধের পরিসংখ্যানেও। এখনও চলমান ঘটনায় চোখ রাখলে দেখা যাবে প্রতিটি যুদ্ধেই দেখা যায় অসহায় নারীরা হচ্ছে যৌননির্যাতনের প্রথম এবং প্রধান শিকার। বাংলাদেশে, বসনিয়া, রুয়ান্ডা, আলবেনিয়া, কঙ্গো, বুরুন্ডিয়া, প্যালেস্টাইন, ইরাক, ইরান সহ প্রতিটি যুদ্ধের ঘটনাতেই সেই নগ্ন সত্যই বেরিয়ে আসে যে, এমনকি আধুনিক যুগেও নারীরাই থাকে যুদ্ধের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু।

শুধু আধুনিক যুগই বা বলি কেন, ইতিহাসের পাতা উল্টালে কিংবা বিভিন্ন দেশের লোককাহিনি উপকথাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যৌনতার কারণে পৃথিবীতে যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং রক্তপাতও কম হয়নি। তার উল্লেখ পাওয়া যায় সাহিত্যে, ইতিহাসে, আর শিল্পীর ভাস্কর্যে। পশ্চিমা বিশ্বে হোমারের সেই প্রাচীন সাহিত্য ইলিয়াড শুরুই হয়েছিল একটি যুদ্ধকে কেন্দ্র করে, আর সেই যুদ্ধ আবার হয়েছিল একটি নারীকে অপহরণের কারণে সেই হেলেন; হেলেন অব ট্রয়।
আমাদের সংস্কৃতিতেও প্রাচীন রামায়ণের কাহিনি আমরা জানি রাম-রাবণের যুদ্ধ হয়েছিল সীতাকে অপহরণের জন্য। এ ধরনের সাহিত্যের উপকরণ এবং উপকথা সব সংস্কৃতিতেই কমবেশি ছড়িয়ে আছে। এ থেকে একটি নিষ্ঠুর সত্য বেরিয়ে আসে ব্যাপক আকারে জিন সঞ্চালনের জন্য যুদ্ধ পুরুষদের একটি আকর্ষণীয় মাধ্যম ছিল প্রতিটি যুগেই।
আজ আমরা যারা পৃথিবীতে বাস করছি, শান্তি-প্রিয় নিরুপদ্রব জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি, তারা সবাই কিন্তু সেই আদিম সমাজের সহিংস পূর্বপুরুষদের বংশধর, যারা অস্ত্র চালনায় ছিল দক্ষ আর সুচারু এবং যারা সাহসিকতা, বুদ্ধি, ক্ষিপ্রতা আর সমরদক্ষতার মাধ্যমে স্বীয় গোত্রকে দিয়েছিল বাড়তি নিরাপত্তা, আর নিঃসন্দেহে অর্জন করতে পেরেছিল বহু নারীর প্রণয় এবং অনুরাগ। ঠিক সেজন্যই পুরুষদের এই ‘পুরুষালি’ গুণগুলো সার্বজনীনভাবেই নারীদের কাছে প্রত্যাশিত গুণ হিসেবে স্বীকৃত। বিখ্যাত নৃতাত্ত্বিক সলোমন আ্যাশ সেজন্যই বলেন, ‘আমরা এমন কোনো সমাজের কথা জানি না, যেখানে সাহসিকতাকে হেয় করা হয়, আর ভীরুতাকে সম্মানিত করা হয়’।
এ থেকে বোঝা যায় যে, সাহসিকতার মতো গুণগুলোকে আমাদের আদিম পুর্বপুরুষেরা যৌনতার নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের অজান্তেই নির্বাচিত করেছিল। এখনও সেই গুণগুলোর উৎকর্ষতার চর্চাকে ইনিয়ে বিনিয়ে মহিমান্বিত করার অফুরন্ত দৃষ্টান্ত দেখি সমাজে। জেমস বন্ড, মিশন ইম্পসিবল কিংবা আজকের ‘নাইট এন্ড ডে’র মতো চলচিত্রগুলো ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়, যার কেন্দ্রে থাকে প্রায় অমানবীয় ক্ষমতাসম্পন্ন হিরোইক ইমেজের একজন পুরুষালি চরিত্র, যে অসামান্য বুদ্ধি, ক্ষিপ্রতা আর সাহসের মাধ্যমে একে একে হাজারো বিপদ পার হয়ে চলেছে, আর অসংখ্য নারীর মন জয় করে চলেছে।
শুধু জেমস বন্ডের ছবি নয়, বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীরা সমাজের বিভিন্ন প্যাটার্নের ব্যাখ্যা হিসেবে সম্প্রতি খুব চমৎকার কিছু বিশ্লেষণ হাজির করেছেন। বইয়ের পরিসরের কথা ভেবে সব কিছু নিয়ে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হয়তো সম্ভব নয়, আমি এই অধ্যায়ে মূলত আমার আলোচনা ভায়োলেন্স বা সহিংসতা বিষয়েই কেন্দ্রীভূত রাখার চেষ্টা করব।
অধ্যাপক মার্টিন ড্যালি এবং মার্গো উইলসন ১৯৮৮ সালে একটি বই লেখেন হোমিসাইড নামে[২০৩]। তাদের বইয়ে তারা দেখান যে, হত্যা, গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, শিশু হত্যা, অভিভাবক হত্যা, পুরুষ কর্তৃক পুরুষ হত্যা, স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হত্যা, স্ত্রী কর্তৃক স্বামী হত্যা সব কিছুর উৎস আসলে লুকিয়ে রয়েছে বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের ব্যাখ্যায়। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক।
ভালোবাসা কারে কয়
১৯৬.↑ Ann Gibbons, Archaeologists Rediscover Cannibals, Science, Vol. 277. no. 5326, pp. 635 – 637, 1997
১৯৭.↑ Jane Bosveld, “Did We Mate With Neanderthals, or Did We Murder Them?”, Discover Magazine, November 2009
১৯৮.↑ Ralph S. Solecki, Rose L. Solecki, Anagnostis P. Agelarakis, “The Proto-Neolithic Cemetery in Shanidar Cave”, 2004
১৯৯.↑ শিক্ষানবিস, শনিদার গুহার নিয়ান্ডারথালেরা, মুক্তমনা ↑
২০০.↑ Jane Bosveld, “Did We Mate With Neanderthals, or Did We Murder Them?”, Discover Magazine, November 2009
২০১.↑ (i)Tooby, J., and L. Cosmides. “The Evolution of War and Its Cognitive Foundations.” Proceedings of the Institute for Evolutionary Studies, 88 (1988): 1–15. (ii) Wrangham, R. W. “Evolution of Coalitionary Killing.” Yearbook of Physical Anthropology 42 (1999): 1–30.
২০২.↑ Trevor Royle, Collins Dictionary of Military Quotations, Collins; New Ed edition, 1991
২০৩.↑ Margo Wilson and Martin Daly, Homicide, Aldine Transaction, 1988