কিন্তু এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কেনই বা আমাদের বিবর্তন সম্পর্কে জানতে হবে, এর খুঁটিনাটি বুঝতে হবে? দিব্যি তাে দিন চলে যাচ্ছে এসব তত্ত্বকথা না জেনেই। একটু খেয়াল করে আশেপাশে তাকালেই দেখা যাবে যে, বিবর্তনের তত্ত্ব ছাড়া আজকে আমাদের চারপাশের অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না, অনেক সহজ প্রশ্নের উত্তর মিলছে না।
যেমন ধরুন, ডাক্তাররা কেন বারবার করে রােগীকে তার আন্টিবায়ােটিকের পুড়াে ডােজটা শেষ করতে বলে দেন? আমাদের সাথে ঐ বেচারী ইঁদুরগুলাের কিইবা মিল রয়েছে যে, বিজ্ঞানীরা মানুষের উপর নতুন কোন ওষুধ প্রয়ােগ করার আগে তাদের উপর পরীক্ষা করে নেন? কিংবা আমাদের চারপাশে এত্ত ধরনের প্রাণের সামহার কেন, তাদের দরকারটাই বা কি ছিলাে? পৃথিবীর একেক জায়গায় কেন একেক রকমের প্রাণী দেখতে পাওয়া যায়? আমরাই বা এলাম কোথা থেকে? কেন একেক জায়গার মানুষ দেখতে একেক রকম হল?……
বিবর্তনবাদ তত্ত্বের মাধ্যমে আজকে আমরা আমাদের চারপাশের জীবন এবং প্রকৃতি সম্পর্কে কিছু মৌলিক প্রশ্নের উত্তর পেতে পারি। আমাদের চারপাশের জীবের মধ্যে এত বৈচিত্র দেখা যায় কেন, এমনকি একটা মানুষের সাথে আরেকটা মানুষের কেন এত পার্থক্য? বেঁচে থাকার প্রয়ােজনেই আসলে প্রকৃতিতে একেকটা জীবের একেক রকম বৈশিষ্ট্যের বিবর্তন ঘটে, এর ফলশ্রুতিতেই তারা একেকজন একেক পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে খাবার এবং শক্তি জোগার করে টিকে থাকতে সক্ষম হয়।
যেমন- মানুষের কথাই ধরা যাক, সব মানুষ একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত হলেও তাদের মধ্যে পার্থক্যের কোন শেষ নেই। একেক এলাকার মানুষের মধ্যে একেরকমের বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী যে পার্থক্যটা চোখে পড়ে তা হচ্ছে মানুষের গায়ের রং। কালাে রং এর গায়ের মানুষের সূর্যের তাপ থেকে নিজের চামড়াকে রক্ষা করার ক্ষমতা অনেক বেশী থাকে। তাই আমরা সাধারণভাবে দেখতে পাই যে, শীতের দেশের মানুষের চামড়া অনেক বেশী সাদা আর গরম দেশের মানুষের গায়ের রং কালাে হয়।
অবশ্য ইতিহাসের পরিক্রমায় মানুষ তার জীবন আর জীবিকার তাগিদে এতবার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গিয়ে বসতি স্থাপন করেছে যে এখন সব জায়গায় এই পার্থক্য আর এত সুক্ষ্মভাবে নাও দেখা যেতে পারে। ব্রিটিশ প্রকৃতিবিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন যে বিভিন্ন প্রজাতির ফিঙ্গে (Finch) দেখে খুব অবাক হয়েছিলেন তাদের কথাই ধরি। গ্যালাপ্যাগাস দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দ্বীপে তিনি বিভিন্ন রকমের ঠোঁটওয়ালা ফিঙ্গে দেখতে পান, ভালাে করে পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, সময়ের সাথে সাথে খাবারের প্রকৃতি অনুযায়ী তাদের ঠোটের আকারও বদলে গেছে। অতীতে এক সময় সব রকমের ফিঙ্গেই একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত ছিলাে, সময়ের সাথে সাথে বিবর্তনের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন প্রজাতিতে পরিণত হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এরকম ১৪ ধরনের ফিঙ্গের প্রজাতি খুঁজে পেয়েছেন।

আবার ঠিক উলটোভাবে দেখা যায় যে বিভিন্ন প্রাণীর বৈশিষ্ট্য এবং জিনের গঠনের মধ্যে অকল্পনীয় রকমের মিল দেখা যাচ্ছে [৪]। যেমন ধরুন, মানুষের হাতের হাড় আর এত অন্যরকম দেখতে একটা তিমি মাছের সামনের পাখার হাড় প্রায় একইরকম। আবার, জন্মপূর্ববর্তি ভ্রুণাবস্থায় বিভিন্ন প্রাণীর বাচ্চাদের দেখতে অনেকটা একইরকম দেখায়।
শিম্পাঞ্জীদের সাথে আমাদের ডিএনএ প্রায় ৯৮.৬%, ওরাং ওটাং এর সাথে ৯৭%[৫], আর ইঁদুরের সাথে ৮৫%[৬] মিলে যাচ্ছে। এ কারণেই ইঁদুর বা অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে বিভিন্ন ওষুধের বা চিকিৎসার প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে তা পরবর্তীতে আবার মানুষের দেখে প্রয়ােগ করা সম্ভব হয়। আর এসব সাদৃশ্যের পিছনে কারণ একটাই, পৃথিবীর সব প্রাণীই একই আদি জীব বা পূর্বপুরুষ থেকে কোটি কোটি বছরের বিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপত্তি হয়েছে। যে জীব যত পরে আরেক জীব থেকে বিবর্তিত হয়ে অন্য প্রজাতি বা জীবে পরিণত হয়েছে তার সাথে ঐ জীবের ততই বেশী মিল খুজে পাওয়া যায়।
বিবর্তনের প্রক্রিয়া থেকে আমরা চারপাশের পরিবেশ, প্রকৃতি এবং তার গঠন সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণাও পাই। বিবর্তনের মাধ্যমে যেমন অহরহ জীবের পরিবর্তন ঘটছে আবার তারই ফলশ্রুতিতে পরিবর্তন ঘটে চলেছে আমাদের পারিপার্শ্বিকতারও। এর একটা মজার উদাহরণ হচ্ছে পৃথিবীর বাতাসে অক্সিজেনের আবির্ভাব। আমাদের তাে উদ্ভবই ঘটতাে না বাতাসে অক্সিজেন না থাকলে! অবাক লাগে ভাবতে যে আদি পৃথিবীর বাতাসে মুক্ত অক্সিজেনের কোন অস্তিতই ছিলাে না।
প্রায় আড়াইশাে কোটি বছর আগে সালােক সংশ্লেষণকারি (Photo Sysnthetic) উদ্ভিদের বিবর্তন ঘটে যারা পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং পানি গ্রহন করে খাদ্য তৈরী করতে শুরু করে এবং বিনিময়ে পরিবেশে মুক্ত অক্সিজেন ছেড়ে দিতে শুরু করে। তার ফলেই আমাদের পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে অক্সিজেনের আবির্ভাব ঘটতে শুরু করে। এই যে আমরা আমাদের চারপাশে মানুষসহ অক্সিজেন গ্রহণকারী সব প্রাণী দেখছি, তাদের সবারই বিবর্তন ঘটেছে বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন ছড়িয়ে পরার পর।
জীবের বিবর্তন না বুঝলে আজকে চিকিৎসাবিদ্যা, কৃষিবিদ্যার বিভিন্ন আবিষ্কার অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতাে। বিভিন্ন রােগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসগুলাে কিভাবে ওষুধ প্রয়ােগের সাথে সাথে বিবর্তিত হয়ে আরও শক্তিশালী এবং পরিবর্তিত রূপ ধারণ করতে পারে তা না বুঝলে আজকে ওষুধ কোম্পানীগুলােকে ঠিক অসুখের জন্য ঠিক ওষুধটা তৈরী করাই বন্ধ করে দিতে হবে। আজকে ডাক্তাররা অ্যান্টিবায়ােটিকের যথেচ্ছ প্রয়ােগ বন্ধ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন, কারণ আমাদের শরীরে রােগ সারাতে যত বেশী অ্যান্টিবায়ােটিক প্রয়ােগ করা হচ্ছে ততই ব্যাকটেরিয়াগুলাে তাতে খাপ খাইয়ে নিয়ে পরিবর্তিত হতে হতে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
একই ব্যাপার ঘটতে দেখা যায় জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করার সময়েও। কদিন আগে আমেরিকার একটা স্টেটের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, ইদানীং কালে সেখানকার হাসপাতালগুলাে থেকেই অনেক বেশী রােগী জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে, অর্থাৎ তারা আসে এক রােগের চিকিৎসা করাতে আর ঘরে ফিরে যায় হাসপাতাল থেকে পাওয়া অন্য রােগের জীবাণু শরীরে নিয়ে। এর থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার রােগী মারাও যাচ্ছে। ব্যাকটেরিয়াগুলাে প্রচলিত অ্যান্টিবায়ােটিকে অভ্যস্ত হয়ে বিবর্তনের মাধ্যমে নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে, আর তার ফলে হাসপাতালগুলােতে ছড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য শক্তিশালী জীবাণু যাদেরকে নিরােধ করতে ডাক্তাররা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন।
বিবর্তনের ধারনা জানার এবং বােঝার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। বিবর্তনবাদ আমাদের সময়ের এমনই একটি শক্তিশালী তত্ত্ব যে এর বিস্তৃতি শুধু বৈজ্ঞানিক বা টেকনিক্যাল জগতেই নয় বরং সামাজিকভাবেও এর গুরুত্ত্ব অপরিসীম। সমাজের বেশীর ভাগ মানুষ, বিশেষ করে রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় অংশ, এর কথা শুনলেই আঁতকে ওঠেন, কারণ এটা আমাদের প্রচলিত পুরানাে, অবৈজ্ঞানিক এবং ধর্মীয় ধারণাগুলােকে সমর্থন করে না।
বিবর্তনবাদকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে শেখার মাধ্যমে আমরা নিজেরা যেমন আমাদের চারদিকের প্রকৃতি এবং পরিবেশকে বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করতে শিখবাে, তেমনিভাবে বুঝতে এবং অন্যদেরকে বুঝাতে পারবাে বৈজ্ঞানিক চিন্তা এবং সমাজে হাজার হাজার বছর ধরে টিকে থাকা বহু স্থবির চিন্তাধারার মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়। বিবর্তনবাদ বলে প্রকৃতি প্রতিনিয়ত। বিবর্তিত হচ্ছে, পরিবর্তনই জগতের মূল নিয়ম, নতুনকে, পরিবর্তনকে সাদরে অভ্যর্থনা জানানােই প্রকৃতির রীতি।
সব কিছুই ঘটছে আমাদের চোখেরই সামনে কখনাে খুবই ধীরে, কখনও বা আকস্মিকভাবে খুব দ্রুত গতিতে। পরিবর্তন ঘটছেই; বাইরের কোন ঐশ্বরিক শক্তি এসে যেমন আমাদের কোন কিছু বদলে দিয়ে যাচ্ছে না, তেমনি পরলৌকিক পুরুষ্কারের জন্যও হা-পিত্যেশ করে বসে থাকার কোন কারণ নেই। দর্শনের ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় যে আমরা আসলে নিজেদের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং সংগ্রামের মাধ্যমেই পরিবর্তিত হতে হতে প্রতিনিয়ত এগিয়ে চলেছি সামনের দিকে।
তাই এই বিবর্তন তত্ত্বকে বিজ্ঞানের ইতিহাসে গুটিকয়েক যে বড় বড় ঘটনা ঘটেছে তার একটি বলে ধরে নেওয়া হয়। পদার্থবিদ ভিকটর স্টেঙ্গার যেমন বলেছেন,
…… তবে গত পাঁচ শতাব্দীতে অন্ততপক্ষে দুটি বৈজ্ঞানিক আবিস্কারকে বড় paradigm shift হিসাবে চিহ্নিত করা যায় ;
- (১) ষােড়শ শতাব্দীতে কোপার্নিকাসের আবিস্কৃত সৌরকেন্দ্রিক তত্ত্ব- পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘােরে এবং
- (২) উনবিংশ শতাব্দীতে (১৮৫৯ সাল) চার্লস ডারউইন এবং অ্যালফ্রেড রাসেল ওয়ালেসের প্রস্তাবিত তত্ত্ব – প্রাকৃতিক নির্বাচনের (Natural Selection) মাধ্যমে জীবজগতের বিবর্তন।
এই দুটি আবিস্কার শুধু যে মানুষের চিন্তাধারাকে এক নতুন স্তরে উন্নীত করতে সাহায্য করেছিল তাই নয়, সেগুলাে তখনকার প্রাচীন এবং গভীরভাবে সুরক্ষিত চিন্তাপদ্ধতিকে সরিয়ে দিয়ে পুরানাে ধারণাগুলাের উপরও আধিপত্য বিস্তার করে নিয়েছিল। এখানে বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় যে, তত্ত্ব দুটোই পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলাের প্রাচীন চিন্তাগুলােকে অত্যন্ত প্রবলভাবে আঘাত করেছিলাে – যে গুলােকে মানুষ এতদিন ধরে সৃষ্টিকর্তার অভ্রান্ত বাণী হিসেবে বিশ্বাস করতাে [৭]।
চার্লস ডারউইনের প্রস্তাবিত এই বিবর্তন তত্ত্বে দুটি গুরুত্ত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে, সাম্প্রতিক কালের বিখ্যাত বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স সুন্দরভাবে অল্প কথায় বর্ণনা করেছেন জীববিজ্ঞানের এই মূল দুটি তত্ত্বকে,
জীববিজ্ঞানে ডারউইনের মূল অবদান একটি নয় দুটো, আর এই দুটো বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা ছাড়া বিবর্তনবাদ বােঝা সম্ভব নয়। তিনিই প্রথম পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে প্রমাণ করে দেখান যে, জীবজগৎ স্থিতিশীল নয় – বিবর্তন ঘটছে, কোটি কোটি বছর ধরে বিবর্তনের মাধ্যমেই জীবের পরিবর্তন ঘটছে। আর তারপর ওয়ালেসের সাথে একসাথে প্রথমবারের মত ব্যাখ্যা করলেন যে, প্রাকৃতিক নির্বাচন (Natural Selection) প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ঘটে চলেছে এই নিরন্তর পরিবর্তন, যা এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত জীববিজ্ঞানের একটি অন্যতম গুরুত্বপূণমূল তত্ত্ব [৮]।
তবে পরবর্তী অধ্যায়ে এ নিয়ে বিস্তারিত আলােচনা শুরু করার আগে আরেকটি ছােট্ট বিষয় পরিষ্কার করে নেওয়া যাক। অনেকে মনে করেন, বিবর্তন তত্ত্ব বােধ হয় প্রাণের উৎস নিয়েও কাজ করে। এটি কিন্তু সর্বাংশে সত্য নয়। উৎস নিয়ে আসলে বিবর্তন তত্ত্বের কোন মাথা ব্যথা নেই, এটি কাজ করে মূলতঃ প্রাণের উৎপত্তির পর থেকে কিভাবে তার বিকাশ ঘটেছে তা নিয়ে। যদিও বিজ্ঞান জীবনের উৎস সন্ধানে খুবই তৎপর (যেমন, প্রাণের উৎপত্তির জৈব রাসায়নিক তত্ত্ব, প্যানস্পার্মিয়া ইত্যাদি তত্ত্ব দ্রষ্টব্য), কিন্তু এগুলাে কোনটাই বিবর্তন তত্ত্বের মূল বিষয় নয়। যে ভাবেই জীবনের উৎপত্তি ঘটুক না কেন, সেটি কি করে পদে পদে বিকশিত হল, বিবর্ধিত হল, উদ্ভব ঘটল নতুন নতুন প্রজাতির – এগুলােই বিবর্তন তত্ত্বের মূল আলােচ্য বিষয়।

বিবর্তনের পথ ধরে
৪.↑ The National Academies Press (NAP), Teaching about Evolution and the Nature Of Science ↑
৫.↑ Stringer, C and Andrews P, 2005, The Complete World of Human Evolution. Thames and Hudson, New York, USA.
৭.↑ Stenger, VJ, 2003, Has Science Found God? The Latest Results in the Search for Purpose in the Universe, Prometheus Books, New York, USA
৮.↑ Dawkins R, Darwin and Darwinism, Mukto-Mona Darwin Day celebration ↑