কালঃ ৪২০ খৃষ্টাব্দ
এক
আমার ভাগ্যচক্ত যেন কেমন! কখনও এক জায়গায় স্থির থাকতে পারিনি। সংসার মরঙ্গ আমাকে সর্বদা চষ্ণল এবং বিহবল করে রেখেছে। জীবনে মধুর দিনও এসেছে যদিও তিক্ত দিনগুলোর তুলনায় সংখ্যায় কম আর পরিবর্তন তো যেন বর্ষাশেষে বাদলা দিনের মতো, বৃষ্টি আর রৌদ্রে লুকোচুরি । জানি না, এই পরিবর্তনের চক্ত কেন ঘুরছে।
পশ্চিম উত্তরাপথ গাদ্ধারে এখনও মধুপর্কে বাছুরের মাংস দেওয়া হয়। কিন্তু মধ্যদেশে (উত্তপ্রদেশ, বিহার) গোমাংসের নাম করা পাপ, এখানে গো-ব্রাক্ষণ রক্ষা করাই শ্রেষ্ট ধর্ম। আমি বুঝে উঠতে পারি না, একই ধর্মে এত বৈপরীত্য কেন! এক জায়গার অধর্ম কি অপর জায়গায় ধর্ম রুপে চলতে থাকবে; অথবা এক জায়গার পরিবর্তন আগে সাধিত হয়েছে, অন্যত্র পরে তার অনুকরণ করবে?
অবন্তীর (মালবা) এক গ্রামে ক্ষিপ্রা নদীতটে আমি জম্মগ্রহণ করেছি। আমার কুলের লোকের নিজেদের পরিব্রাজক বলে, যদিও এদের আপন ক্ষেত-খামার , ঘর-বাড়ি বয়ে গেছে এবং সেগুলো আপন স্বন্ধে বহন করে স্থানান্তরে নিয়ে যাওয়া চলে না । আমাদের কুলের লোকেদের দেহের গড়ন এবং রঙ ও রুপ গ্রামের অন্যান্য লোকজন থেকে কিছুটা পৃথক।
আমরা অধিকতর দীর্ঘ, গৌর এবং সেই সঙ্গে আমাদের উৎকর্ষ অন্যদের কাছে ছিল অসহ্য। আমার মা গ্রামের স্ত্রীলোকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠা সুন্দরী ছিলেন, তাঁর সুগৌর মুখমণ্ডলে ছড়িয়ে-পড়া বাদামী চুলে—বড়ই সুন্দর লাগত। আমাদের পরিবারের লোক নিজেদের ব্রাহ্মণ বলত,কিন্তু আমি লক্ষ্য করতাম গ্রামের লোকের তাতে সন্দেহ রয়ে গেছে। সন্দেহের কারণও ছিল্ এইস্থানে ব্রাহ্মণদের ভিতর সুরাপান মহাপাপ বলে গণ্য হত, কিন্তু আমাদের গ্রহে তা বরাবর তৈরী হত এবং পান করা হত।
উচ্চকুলে স্ত্রী-পুরুষের সম্মিলিত নাচ-গান এখানে অশ্রুতপূর্ব, কিন্তু আমাদের কুলের সাতটি পরিবার—যারা একই বংশজাত, সন্ধ্যা হলেই খোলা জায়গায় এক সঙ্গে মিলিত হতাম। শৈশবে আমি ভাবতাম, সকল জায়গাতেই এই একই নিয়ম,কিন্তু গ্রামের অন্যান্য বালকদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে তাদের বিদ্রুপ বাক্যে বুঝতে পারলাম যে, তারা আমাদের অদ্ভুত ধরনের মানুষ বলে মনে করে এবং আমাদের কৌশীদ্যকে স্বীকার করলেও ব্রাহ্মণত্বকে সন্দেহ করে। আমাদের গ্রামখানা বেশ বড়, দোকান এবং ব্যবসায়ীদের বাড়িঘরও ছিল।
গ্রামে কিছু নাগর পরিবার ছিল, লোকে তাদের বেনে বলত, কিন্তু তারা আমাদের মতোই নিজেদের ব্রাহ্মণ বলত। কিছু নাগর-কন্যা বিবাহসুত্রে আমাদের কুলে এসেছিল, গ্রামের লোকদের আমাদের ব্রাহ্মণ বলে স্বীকার না করবার এটাও একটা কারণ। তাদের ব্ক্তব্য, ব্রাহ্মণের পান-ভোজন-বিবাহ রীতি অবহেরা করে আমরা কি করে ব্রাহ্মণ থাকতে পারি? আমার খেলার সাথী ছেলেদের যদি কখনও আমার ওপর রাগ হত তবে আমাকে ‘জুঝওয়া’ বলে অবজ্ঞায় নাক সিঁটকাত। এ সম্বন্ধে মাকে আমি অনেকবার প্রশ্ন করেছি, কিন্তু তিনি আমার প্রশ্নকে বরাবর এড়িয়ে গিয়েছেন।
দশ বছর বয়স হল আমার, গ্রামের েএক ব্রাহ্মণ গুরুর পাঠশালায় পড়তে যেতে লাগলাম। আমার সহপাঠীরা প্রায় সকলেই ব্রাহ্মণ—লোকের কথা অনুসারে সকলেই খাঁটি ব্রাহ্মণ। এরা ছাড়া আমি এবং অপর দুই নাগর বিদ্যার্থী ছিলাম। সহপাঠীরা আমাদের আধা-ব্রাহ্মণ বলে ডাকত। বিদ্যার্থীগণের মধ্যে আামি সবচেয়ে তীক্ষুধী ছিলাম এবং আমার প্রতি গুরুর বিশেষ স্নেহ ছিল।
আামদের কুলে স্বভাব আমার মধ্যেও ছিল, এবং কারও কথা সহ্য না করে তার সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ করতাম। একদিন আমার এক সহপাঠী বিদ্রুপ করে বলল, “ব্রাহ্মণ হয়েছে, জুঝওয়া কোথাকার!” আমার কাকার বাল্যকপুত্র আমার পক্ষ নিতে এসেছিল, তাকেও বলল,“যবন কোথাকার, নাগর ব্রাহ্মণ হয়েছে!” শৈশবে ছোট ছেলেদের এমনি খোঁটা দিতে শুনেছি, কিন্তু তখনও সে সব আমাকে এত তীব্রভাবে আঘাত করেনি, অথবা ওতে এত কিছু ভাববারও অবকাশ হয়নি!
আমরা তিনজন ছাড়া পাঠশালায় আরও ত্রিশজন বিদ্যার্থী এবং চারজন বিদ্যাথিণীও ছিল। এরা দেখতে আমাদের মতো ফর্সা বা দীর্ঘকায় নয়, তবু তারা এমন ভাব দেখাত যেন আমরা তাদের তুলনায় নিম্নশ্রেণীর মানুষ!
সেদিন ঘরে ফিরে এলে আমাকে বড়ই বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। আমার শুষ্ক অধর দেখে মা আমার মুখ-চুম্বন করে বললেন, “আজ এত বিমর্গকেন তুই?”
মা অত্যন্ত আগ্রহ প্রকাশ করাতে আমি বললাম, “মা, আমাদের কুলে কি এমন দোষ আছে , যে জন্য লোকে আমাদের ব্রাহ্মণ বলে স্বীকার করতে চায় না?”
“পুত্র, আমরা পরদেশী ব্রাহ্মণ, এ জন্য তারা এ রকম ভাবে।”
“শুধু বাহ্মণ নয় মা, অব্রাহ্মণেরাও আমাদের ব্রাহ্মণত্বে সন্দেহ প্রকাশ করে।”
“ব্রাহ্মণেরা বলে বলেই অন্যরাও বলে।”
“আামাদের যজমানীও নেই; অন্র ব্রাহ্মণেরা পুরোহিতগিরি করে, ব্রাহ্মণ-ভোজনে যায়, আমাদের কুলে তাও দেখা যায় না। এ ছাড়া অন্য ব্রাহ্মণেরা তো আমাদের সঙ্গে পংক্তি ভোজনেও সম্মত হয় না। যদি এর কারণ জানো তবে বল মা।”
মা আমাকে অনেক বোঝাল কিনউত আমি সন্তুষ্ট হতে পারলাম না। আমার চিত্ত যখন চঞ্চল, সে সময় আমার নাগর সহপাঠী এবং আত্মীয়দের আামার প্রতি সহানুভূতি ছিল। অথবা বলা যায়, আমরা পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলাম।
দুই
আরও কিছুকাল অতিবাহিত হল। আমি তের বছরের হয়ে উঠলাম এবং পাঠশালার শিক্ষা প্রায় সমাপ্ত হয়ে এল। বেদ, ঋগ্বেদ, ঐতরেয় ব্রাহ্মণ, ব্যাকরণ, নিরুক্ত এবং কিছু কাব্যও আমি পড়েছিলাম। আমার প্রতি গুরুদেবের স্নেহ ক্রমশ বেড়েই চলেছিল। তাঁর কন্যা বিদ্যা আমার চেয়ে বয়সে ছোট ছিল। পাঠ মুখস্থ করতে আমি তাকে সাহায্য করতাম। গুরুদেব এবং গুরুপত্বীর ব্যবহার দেখে বিদ্যাও আমাকে খুব মান্য করত, আমাকে “ভাই-সুর্পণ’ বলে ডাকত। গুরু পরিবারে আমার কখনও দুঃসময় আসেনি, কারণ গুরুপত্নীর স্নেহ আমার কাছে মায়ের সমানই ছিল।
এই সময়ে আবার একদিন এক সহপাঠী আমাকে “জুঝওয়া’ বলে বিদ্রুপ করল সম্পূর্ণ অকারণেই। নিজেকে আমি তখন সকল দিক থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছিলাম। লেখা-পড়ায় আমি অত্যন্ত তীক্ষ্ণধী ছিলাম বলে সহপাঠীদের ঈর্ষা হত, এ ছাড়া বিদ্রুপের আর কোনো কারণ ছিল না। আমার প্রকৃতি গম্ভীর হয়ে উঠেছিল। মন যে উত্তেজিত হত না, তা নয় কিন্তু আমি ধীরে ধীরে নিজেকে সংযত করতে শিখেছিলাম।
আমার ঠাকুর্দার বয়স সত্তর বছরের ওপর। বহুবার আমি তাঁর কাছে দেশ-বিদেশের যুদ্ধ-অশান্তির কাহিনী শুনেছি। এত্ত শুনেছিলাম যে, তিনিই প্রথমে, আপন ভাই-এর সঙ্গে এই গ্রামে আসেন। ঠাকুর্দার কাছ থেকে আপন কুল সম্বন্ধে আসল কথা জানতে আমি দৃঢ়সঙ্কল্প হলাম।
গ্রামের পূর্বদিকে আমাদের আমবাগান ছিল। যথেষ্ট আম ফলেছিল সেখানে, যদিও পাকতে তখনও দেরী। সোনাদাসী ইতিমধ্যেই সেখানে নিজের ডেরা উঠিয়ে নিয়ে গেছে। শুনেছি, আমার ঠাকুর্দা যখন গ্রামে এলেন তকন সোনাকে তিনি কোনো দক্ষিণদেশীয় ব্যাপারীর কাছ থেকে চল্লিশ রৌপ্য মুদ্রা দিয়ে কিনেছিলেন। ঐ সময় দক্ষিণ-দেশ থেকে বহু ব্যবসায়ী বিক্রয় করবার উদ্দেশ্য দাস-দাসীদের সঙ্গে করে নিয়ে আসত।
সোনা তখন যুবতী চিল, না হলে দাসীরা কখনেই অত মহার্ঘ হয় না। সোনার দেহের কালো চামড়া ঢিলে হয়ে পড়েছিল, মুখমণ্ডল কুঞ্চিত বলিরেখায় ভরে গিয়েছিল, কিন্তু লোকে বলে, একদিন সে সুন্দরী ছিল। সে ছিল ঠাকুর্দার অ্যন্ত প্রিয়পাত্রী; বিশেষ করে যখন নিরালয় শুধু দু’জনে একত্রে থাকত। লোকে অবশ্য এই ঘনিষ্ঠতার অন্য অর্থ করত। বিপত্নীক স্বাস্থ্যবান এক প্রৌঢ় ব্যক্তির ওপর সে সন্দেহ খুবই স্বাভাবিক।
সন্ধ্যাবেলা ঠাকুর্দা বাগানে যেতেন, একদিন আমিও তাঁর সঙ্গে গেলাম। ঠাকুর্দা আপন মেধাবী পৌত্রকে বড়ই স্নেহ করতেন। কথা বলতে বলতে আমি এক সময় বললাম, “দাদু, আমি তোমার কাছ থেকে আমাদের কুল সম্বন্ধে সত্যি কথা জানতে চাই, কেন লোকে আমাদের খাঁটি ব্রাহ্মণ বলে স্বীকার করে না, কেন‘জুঝওয়া’ বলে বিদ্রুপ করে? মাকে আমি কতবার জিজ্ঞাসা করেছি, কিন্তু তিনি আমাকে এ সম্বন্ধে কিছুই বলতে চান না।”
“এ কথা তুমি কেন জিজ্ঞেস করছ ভাই?”
“বিশেষ প্রয়োজন আছে দাদু। যদি আমি আসল কথা সঠিকভাবে জানতে পারি, তবে নিজ কুলেয় অপমানের প্রতিকার করতে পারব। ব্রাহ্মণদের সম্বন্ধে আমি এখন অনেক কিছু পড়ে ফেলেছি দাদু। আমার এতখানি বিদ্যাবল আছে যে, নিজের কুল সম্মান আমি অক্ষুণ্ণ রাখতে পারব।”
“সে কথা আমি ও বিশ্বাস করি। কিন্তু ভাই, তোমার মা বেচারীও আামার কুল সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানে না। কাজেই, সে যে কিছু বলতে চায় না—এমন ভেব না। পৃথিবীতে আমাদের কুলের স্থিতি এখন নাগদত্তের সঙ্গে সম্বন্ধসুত্রে আবদ্ধ। আমাদের বিবাহ ইত্যাদি ওদের সঙ্গেই হয়। অবন্তী এবং লাট-এ (গুজরাট) ওদের সংখ্যাও অনেক, এ জন্য ওদের সঙ্গেই আামদের ডুবতে-ভাসতে হয়। তোমার বংশ যৌধেয় অপেক্ষা নাগরদের সঙ্গেই অধিক সম্পর্কিত।”
“যৌধেয় কি দাদু?”
“আমাদের কুলের নাম ভাই। এই জন্যেই লোকে আমাদের ‘জুঝওয়া’ বলে।”
“যৌধেয়রা কি ব্রাহ্মণ ছিল না দাদু?”
“ব্রাহ্মণের চেয়েও শুদ্ধ আর্য ছিল।”
“কিন্তু ব্রাহ্মণ তো নয়!”
“এর উত্তরে এক কথায় ‘হ্যাঁ’ কি ‘না’ বলার চেয়ে তোমাকে যৌধেয়দের সম্পূর্ণ পরিচয় দেওয়াই ভাল। যৌধেয়রা শতদ্রু এবং যমুনার মধ্যবর্তী হিমালয় থেকে মরুভূমি পর্যণ্ত বিস্তৃত অঞ্চলের অধিবাসি এবং সমগ্র যৌধেয় পরিবারই এই অঞ্চলের অধিকারী ছিল।”
“সমগ্র যৌধেয় পরিবার?”
“হ্যাঁ, তাদের কোনো একজন রাজা ছিল না, তাদের রাজ্যকে গণরাজ্য বলা হত। গণ বা পঞ্চায়েতই সকল রাজকার্য চালাত। তারা এক রাজার শাসনাধীন রাজত্বের অত্যন্ত বিরোধী ছিল।”
“এমন-রাঝ্যের কথা তো কোনোদিন শুনিনি দাদু?”
“কিন্তু এমন দেশই ছির ভাই। আমার কাছে যৌধেয় গণরাজ্যের তিনটি মুদ্রা আছে, আমার বাবার কাছ থেকে পেয়েছিলাম। দেশ ছেড়ে আাসবার সময় তাঁর সঙ্গে যে মুদ্রা ছিল, এগুলো তারই এক অংশ।”
“তুমি যৌধেয়দের দেশেই জন্মছিলে দাদু?”
“আমার বাবা-মাকে যখন দেশ ছাড়তে হল, আমি তখন দশ বছরের। আমার দু’জন বড় ভাই ও ছিল, যাদের বংশধরদের তু্মি এখানে দেখছ।”
“দেশ কেন ছাড়তে হল দাদু?”
“পুরকার থেকে ও জায়গা যৌধেয়দেরই ছিল। বহু প্রতাপশালী রাজা-মৌর্ষ, যবন, কেউই রাজকর আদায় করা ছাড়া আমাদের গণরাজ্যকে কোনো আঘাত করেনি। চন্দ্রগুপ্ত, যিনি নিজেকে বিক্রমাদিত্য বলেন, এবং উজ্জয়িনীতে যাঁর দরবার বসে, সেই চন্দ্রগুপ্তের পূর্বপুরুষ যখন সিংহাসনে বসল, তখন তারা যৌধেয়দের উচ্ছেদ করল। যৌধেয়রা প্রতাপশালী সম্রাটকে কিছু কর দিত, কিন্তু সম্রাট তাতে খুশী হলেন না।
তিনি বললেন, ‘আমি এখানে উপরিক (গর্ভনর) নিযুক্ত করব। এখানে আমার নিজের কুমারমাত্য (কমিশনার) থাকবে। আমি আমার সমগ্র রাজ্য যেভাবে শাসন করি, এখানেও তেমনি করব। আমাদের গণ-নায়কগণ অনেক করে বোঝাল যে, যৌধেয়রা অনাদিকাল থেকে গণ-শাসন ছাড়া অপর কোনো-শাসন জানে না; কিন্তু ক্ষমতামদমত্ত রাজা সে কথা মানে কেন?
অবশেষে যৌধয়রা আপন ইষ্ট গণদেবীর সামনে শপথ গ্রহণ করে তরবারি ধরল। বহুবার তারা গুপ্ত-সেনানীকে মেরে হঠিয়ে দিল । যৌধেয়দের তুলনায় চার-পাচঁ গুণ বেশী সৈন্যনিয়েও গুপ্তসেনানীরা টিকতে পারত না। কিন্তু ব্রক্ষপুত্র থেকে মরু অষ্ণল পর্যন্ত বিস্তৃত সাম্রাজ্যের সমগ্র সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে যৌধেয়রা কতক্ষণ আপনাদের অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখতে পারে?