বিবর্তন তত্ত্বের সাহায্যে আমরা সহজেই প্রকৃতিতে জীবের অভিযােজন, সহবিবর্তন আর। মিথােজীবিতাকে ব্যাখ্যা করতে পারি, আমরা ব্যাখ্যা করতে পারি বিভিন্ন জীবের মধ্যকার বিদ্যমান। পারস্পরিক সম্পর্ককে। পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ এবং নান্দনিকতাকে ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে বিবর্তন। তত্ত্ব অত্যন্ত সফল একটি তত্ত্ব।

ক্লাউন মাছগুলাে মিথােজীবিতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এ ধরনের মাছ তার গাঢ় রঙে র কারণে সহজেই অন্যের শিকারে পরিণত হতে পারে, আত্মরক্ষার জন্য গাঢ় রঙের সামুদ্রিক এনিমােনের শুড়ের ভিতর প্রায়শঃই আত্মগােপন করে। এভাবে ক্লাউন মাছগুলাে শিকারী মাছের দৃষ্টি এড়িয়ে যেতে সমর্থ হয়। আবার অন্যদিকে এনিমােনগুলােও ক্লাউন মাছের কারণে উপকৃত হয়। কারণ ক্লাউন মাছগুলাে এনিমােনভােগী ছােট মাছকে তাড়িয়ে দেয়।

ডারউইন লন্ডনের এক গ্রীন হাউসে মাদাগাস্কারের বিশেষ একটা অর্কিড দেখেন যার মধু রাখার পুষ্পধারটি ১১ ইঞ্চি লম্বা। তিনি তা দেখে মতব্য করেন যে, মাদাগাস্কারের যে জায়গায় এই অর্কিডটা দেখা যায়, সেখানে এমন এক ধরনের মথ জাতীয় কোন পােকা থাকতেই হবে যাদের সুর বা হুল হবে একই রকমের লম্বা। কারণ এই লম্বা মধুর পুষ্পধারের ভিতর শুর ঢুকিয়ে মধু খাওয়ার সময়ই মথগুলাে অর্কিডটার পরগায়ন ঘটাবে। এবং তাইই হলাে – কয়েক দশক পরে বিজ্ঞানীরা ঠিকই খুঁজে পেলেন সেই মাদাগাস্কার স্ফিংস মথ Xanthopan morganii praedictai.

প্রকৃতিতে টিকে থাকার জন্য অনেক প্রাণী ও উদ্ভিদের মধ্যেই এ ধরণের সহযোগিতার সম্পর্ক দেখা যায়, এবং নিজেদের প্রয়োজনে তারা দুজনেই। অভিযােজিত হতে থাকে। আর একেই বলে সহ-বিবর্তন (Co-Evolution)।।